Saturday, February 8, 2014

" টেকনো থিঙ্কস উদ্যোক্তা ইন্টারভিউ – মাশরুর হোসাইন সুহৃদ (ইরর ল্যাব) "

ছাত্রজীবনেই উদ্যোক্তা হয়েছেন এবং সফল হয়েছেন এরকম উদ্যোক্তা দের মধ্যে একজন হচ্ছেন মাশরুর হোসাইন সুহৃদ। তিনি ইরর ল্যাব নামের একটি রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের চিফ অব এক্সপার্ট অপারেশেনস হিসেবে কাজ করছেন। আমাদের আজকের উদ্যোক্তা ইন্টারভিউ তে জানবো মাশরুর হোসাইন সুহৃদ এবং তার প্রতিষ্ঠান ইরর ল্যাব এর আদ্যোপান্ত।
my office1

টেকনো থিঙ্কস :  নিজেদের সম্পর্কে কিছু বলুন-
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ : স্বপ্ন দেখার শুরু থেকে এই পর্যন্ত ইরর ল্যাবের সাথে আছি আমি মাশরুর হোসাইন সুহৃদ। ইরর ল্যাবের এক্সপার্ট অপারেশন ডিপার্টমেন্টগুলোর সার্বিক তত্বাবধান করছি। অ্যাডমিন সেক্টরের দায়িত্ত্বে আছে আরাফাত রহমান। এছাড়াও বিভিন্ন এক্সপার্ট অপারেশনস ডিপার্টমেন্টে দায়িত্বপালন করছে রাফি সিফাত পলল, মোফাসসির হোসেইন ভুইয়া, আবু সাইদ চৌধুরী আবির, মোঃ জাহিদ হাসান, মোহাম্মাদ আলি নিপুন, সাদমান ইশরাক সিদ্দিকি, রুবাব আহমেদ, তাহমিদ অনিক, মুনতাশীর মাহমুদ,সাদিয়া রহমান, আনোয়ার ফয়সাল, হাসিন আরেফিন খান এবং আলমগির জলিল। ফিন্যান্সে কাজ করছে মাহমুদুল হাসান মিলন, পাবলিক রিলেশনস অ্যাডভাইসর হিসাবে ইশতিয়াক আহমেদ তুরাশ এবং এক্সিউটিভ হিসাবে আছে মুনিয়া নাজনিন। এরা সবাই-ই আমাদের এই স্বপ্নিল পথযাত্রার সহযাত্রী।
টেকনো থিঙ্কস : কিভাবে এই উদ্যোগ নিতে আগ্রহী হলেন?
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ : মূলত ফার্স্ট ইয়ারে থাকতে পেনসেলভেনিয়া ইউনিভার্সিটির গ্র্যাস্প ল্যাব থেকেই এমন একটা উদ্যোগের চিন্তা মাথায় আসে । এরপর একটু একটু করে নিজের ক্যালিবার আপগ্রেড করা, তাত্বিক জ্ঞানকে ব্যবহারিক জগতে কাজে লাগানোর চেষ্টা, এবং সর্বোপরি প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে নিজেদের মতো করে কিছু একটা করার স্পৃহাই এই উদ্যোগ নিতে সাহস জুগিয়েছে।
টেকনো থিঙ্কস : শুরুটা কিভাবে করলেন?
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ : গত বছরের মাঝামাঝি থেকেই আমি বুঝতে পারলাম এইবার সময় এসেছে আমাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেবার। ভার্সিটি জীবনে ইঞ্জিনিয়ার্স আড্ডা, এসাব এবং নানা মুখী অ্যাক্টিভিটির সুবাদে সিএসই এবং ইইই ডিপার্টমেন্টের যেসব সতীর্থ এবং অনুজদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাদের মাঝ থেকে কয়েকজনকে আমরা বেছে নেই। তারপর শুরু হয় আমাদের প্ল্যানিং। কিছু চড়াই উতড়াই এর পর ২০১৪ এর জানুয়ারির ১০ তারিখে আনুষ্ঠানিক ভাবে আমাদের প্রতিষ্ঠান ইরর ল্যাব আত্মপ্রকাশ করে ।
টেকনো থিঙ্কস : কোনো প্রতিবন্ধকতা এসেছে কিনা?
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ :  হ্যাঁ কিছু সমস্যা আমাদের সবারই কমবেশি ছিল। তবে সেগুলো পেরিয়ে আসার অদম্য স্পৃহা আর মনোবলের জোরে শেষ পর্যন্ত এরর ল্যাব তার যাত্রা শুরু করেছে- এটাই বড় পাওয়া ।
টেকনো থিঙ্কস : কিভাবে এগিয়ে গেলেন?
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ : মাঝে মাঝে মনে হয়েছে হাল ছেড়ে দেই – কী হবে এইসব করে? পরক্ষনেই নিজেকে বুঝিয়েছি স্বপ্নের সাথে আপস করা উচিত নয়। অনুপ্রেরণার জন্য পরিবারের মানুষগুলো এবং খুব কাছের কিছু বন্ধু ও স্নেহাশীষ অনুজদের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। ডিপার্টমেন্টের ফ্যাকাল্টিদের অনেকের উৎসাহও ছিল।
1781401_812128638800573_392140543_n
টেকনো থিঙ্কস : বর্তমান অবস্থা কি? সফলতা-ব্যার্থতা।
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ :  এরর ল্যাব এর জন্ম হল মাত্র। সাফল্য – ব্যর্থতার যাচাই এই মুহূর্তে করাটা সমীচীন হবে না। তবে আমরা এইটুকু বলতে পারি যে আমরা এখনো আমাদের পরিকল্পনা মাফিক আগাচ্ছি – অন্তত মানুষজনদের ফিডব্যাক সেই দিকেই ইঙ্গিত করে। দেশের প্রথম এলিট ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ, ডেভেলপমেন্ট & কনসালটেন্সি ফার্ম হিসাবে যাত্রাটা শুরু করে সেটা আরও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই এখনকার মূল লক্ষ্য।
টেকনো থিঙ্কস : প্রচারণার ক্ষেত্রে কি করছেন?
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ :  আমাদের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আপাতত প্রচারণা চালানো হচ্ছে । ওয়েবসাইটটি তৈরি করেছে আমাদেরই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট টিম । ফ্যান পেইজ পরিচালনা করছে পাবলিক রিলেশন্স ডিপার্টমেন্ট। 
টেকনো থিঙ্কস : আগামীতে পরিকল্পনা কি?
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ : সরকারি ভার্সিটি গুলোর এলামনাই সংখ্যা বিশাল , এটা কর্মক্ষেত্রে সরকারি শিক্ষাপ্রতিস্থান থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য একটা বাই ডিফল্ট প্লাস পয়েন্ট। আমরা চাচ্ছি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলার গ্রাজুয়েট দের জন্যও এরকম কিছু একটা হোক। পাশাপাশি নিজের মেধা ও সৃজনশীলতা দিয়ে তারা কিছু করার একটা প্ল্যাটফর্ম পাক। একজন ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট কেন টিউশানি করে নিজের মুল্যবান মেধা ও সময় ক্ষয় করবে ? বরং, তাদের জন্যে এমন একটা প্ল্যাটফর্ম করা দরকার, যেখানে তারা নিজেদের পছন্দের বিষয়টায় দক্ষতা অর্জন ও নতুন কিছু উদ্ভাবনের পাশাপাশি কিছু আয়ও করতে পারবে।
প্রফেশন্যালদের জন্যে একটা কাজের ক্ষেত্র উন্মোচনের পাশাপাশি আগামি-প্রজন্মের প্রফেশন্যালসদের জন্যে তেমনি একটা কিছু করার ইচ্ছা আছে।
আমাদের দেশে ইউনিভার্সিটিগুলোতে অনেক প্রোজেক্ট হয়, কিন্তু সেগুলো কখনো প্রোডাক্টে পরিণত হয়না। আমরা ইনোভেটিভ প্রোজেক্ট আইডিয়াগুলোকে প্রোডাক্টে কনভার্ট করতে চাই।
স্কুল কলেজের অনেক শিশু কিশোর ইলেক্ট্রনিক্স, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যানিমেশন কিম্বা অ্যাপ্স নিয়ে কাজে আগ্রহী থাকে। ওরাই তো আমাদের ভবিষ্যৎ, ওদের এখন থেকেই গড়ে নেয়ার দায়িত্বটাও আমাদেরই। তাই তাদের জন্যেও বাংলায় কিছু রিসোর্স তৈরি করছি।
টেকনো থিঙ্কস : ভবিষৎএ আপনার ও আপনার প্রতিষ্ঠানকে কোন অবস্থানে দেখতে চান?
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ :  দেশের প্রথম সারির ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম গুলার কাতারে এরর ল্যাব এর নাম উচ্চারিত হোক এটাই আমাদের কাম্য।
টেকনো থিঙ্কস : নতুন যারা এই ব্যবসায় আসতে চান তাদের কি করা উচিত?
মাশরুর হোসাইন সুহৃদ :  নিজের উপর সবসময় বিশ্বাস রাখুন। নানা বাধা বিপত্তি আসবে, চ্যালেঞ্জ আসবে, মানুষজনের কথা শুনতে হতে পারে – কিন্ত আশা হারানো একেবারেই চলবে না । কে কি বলল কিম্বা কে কতোদূর গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়লো- সেটা কোন উদাহরণ হতে পারেনা। শত ব্যর্থতার মাঝেও স্বপ্ন দেখতে জানতে হবে। ব্যর্থতার সাথে আপোষ করে মানুষ আসলে টিকে থাকে, কিন্তু বাঁচে না। আপনাদের বাঁচার চেষ্টা করতে হবে- শক্ত ভাবে, দৃঢ়তার সাথে !

No comments:

Post a Comment